তো বাংলাদেশি সেই সাংবাদিক সাহেব আজকাল স্বর্গে বেশ বিরক্তিকর সময় কাটাচ্ছেন কারণ স্বর্গেও লকডাউন, যে যার বাবলে আছে, কেউ কারো সাথে সিগারেট বা অপ্সরী শেয়ার করছে না, থ্রিসাম-ফোরসাম সব বন্ধ। সাংবাদিক সাহেব একবার বের হওয়ার চেষ্টা করলেন স্যুইট থেকে কিন্তু কিছুতেই বের হওয়া যাচ্ছে না। আবার রুম টেম্পারেচারের বাগসটাও এখনো ফিক্সড হলো না। নাহ, প্রথম প্রথম স্বর্গের যেই ফাইভ স্টার ব্যাপার স্যাপার ছিল তা এখন আর নেই।
বাংলাদেশি সাংবাদিক সাহেব চিন্তা করলেন কী করা যায়, নেটফ্লিক্স আর চিল করে কতক্ষণ, একটু যদি এই ফাঁকে ঈশ্বরের একটা কোভিড ১৯ ইন্টারভিউ করা যেত তাহলে স্বর্গের নিউজ মিডিয়া ভাল খেত তাছাড়া একটা ব্যক্তিগত আগ্রহ তো আছেই, এই ভেবে সাংবাদিক সাহেব ‘মিট উইথ দি অলমাইটি’ এপ্সে একটা এপয়েন্টমেন্ট ফিক্স করলেন। খানিক পরেই নোটিফিকেশন চলে এল- ঈশ্বর ডেকেছেন সাংবাদিক সাহেবকে।
আজকে থ্রোন রুমে হালকা আলো, না গোলাপি , না আকাশি, কেমন যেন একটা মিষ্টি রঙ। সাংবাদিক সাহেব হালকা গলা খাকারি দিয়ে নিলেন। গমগমে কন্ঠে ওপাশ থেকে আওয়াজ ভেসে আসলো – কী বাপার সাংবাদিক সাহেব, দেশের খবর নিয়ে উদ্গ্রীব নাকি! সাংবাদিক সাহেব একটু হেসে বললেন- জ্বী , তাতো বটেই, সিসিটিভি’র যে হাল দেখলাম শেষবার, সেটা কি রিকভার করা গেল ? গমগমে শব্দে অট্টহাসি- হাহাহাহা… একটু থেমে- সাংবাদিক সাহেব আমার নতুন আইটি ইঞ্জিনিয়ার সিসিটিভি ফেলে দিয়েছে, সে বলেছে আমাকে ভিআর দিয়েই সবকিছু দেখা যাবে, আমি আজকাল এইটকে রেজ্যুলেশনে সব দেখছি, দাঁড়ান আপনাকে স্ক্রিন মিররিং করে দিই। এই বলে ঈশ্বর উনার ভিআর স্ক্রিনমিররিং করলেন থ্রোন রুমের বড় ওএলডি স্ক্রিনে – সাংবাদিক সাহেব পুরো বাংলাদেশ দেখতে পাচ্ছেন, লোকজন ঘুরছে, ফিরছে, বাজার করছে, মাছ ধরছে, সব কিছু ব্যাক টু দি বেইজ, টক শো চলছে, চাল বিতরণ, চাল চুরি সব-ই চলছে। ব্যারিস্টার সুমন ভাই তাঁর বাড়ির ছাঁদে লকডাউন মেনে একা একাই লাইভ করছেন। সাংবাদিক সাহেব বেশ খুশি , বললেন- ইয়া খোদা, আপনি মেহেরবান, অসীম দয়াময়, বাংলাদেশকে করোনার হাত থেকে রক্ষা করুন, দেশের লোকজন যেভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে তা তো ঠিক না!
ঈশ্বর গমগমে কন্ঠে বললেন- হ্যাঁ , কাজকর্মের ভীষন চাপ তাই আমি বাংলাদেশটাতে তেমন নজর দিতে পারছি না, ইউরোপ – আমেরিকা আমাকে ভীষন ব্যস্ত রেখেছে, এর মধ্যে কিম এর শরীরটা ভাল নেই কী যে করি, তাই দুঃখিত আমি এখনই একটা আপডেট দিয়ে দিচ্ছি। এর মধ্যে বাংলাদেশের ম্যাপে কিছু পায়ের ছাপ দেখা গেল, সাংবাদিক সাহেব অবাক হলেন, স্ক্রিনে দেখতে পেলেন ছাপগুলো আসতে আসতে সব ব্রাক্ষনবাড়িয়ার দিকে যাচ্ছে। সাংবাদিক হতবাক আর কিছুটা আনমনেই বললেন- ওহ ঈশ্বর! ঈশ্বর ধীরে ধীরে জবাব দিলেন- ও কিছুনা, ঐটা শয়তানের হেডঅফিস, ও নিশ্চয়ই আবার একটা প্রতিবাদ সভা ডেকে বসে আছে। সাংবাদিক সাহেব দেখলেন ব্রাক্ষণবাড়িয়ার ম্যাপে আরো ভয়ঙ্কর লাল এলার্ট বিপ করতেছে। এরমধ্যে স্বর্গেও এলার্ম বেজে উঠল, সাংবাদিক সাহেব ভয়ে মাথা নিচু করলেন, ঈশ্বর বললেন- হে সাংবাদিক ভয়ের কিছু নেই, শয়তান হারামজাদাটা ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় একটা জানাযার নামায পড়াচ্ছে এবার !